আজ বৃহস্পতিবার, ২১শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৬ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

নিরাপত্তাহীন নারায়ণগঞ্জের পর্যটন কেন্দ্র

  • প্রয়োজনের তুলনায় নিরাপত্তা কর্মী কিছুটা কম-নিরাপত্তা কর্মকর্তা 
  • ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি টিম সব সময় টলহ দেয়-সোনারগাঁ থানা ওসি

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:

পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জের পর্যটন কেন্দ্রে সহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র ভিড় চোখে পরার মতো। উলেখ্যযোগ্য স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম সোনারগাঁ জাদুঘর, পানাম নগরী ও সোনারগাঁ তাজমহল। যেখানে ঈদ বা সাধারণ উৎসব ছাড়াও দেশি-বিদেশী দর্শনার্থীদের আনাগুনায় কানায় কানায় পরিপূর্ন থাকে পুরো এলাকা। কিন্তু প্রচুর ভিড় থাকলেও নেই পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা ও নিরাপত্তা। মাদক সেবী থেকে শুরু করে ইভটিজারও ঘুড়ে বেড়াচ্ছে নির্দ্বিধায়।

জানা যায়, প্রাচীন গৌরবময় ও বৈচিত্যময় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের লীলাভূমি বাংলাদেশ। এর বিস্তৃতি অঞ্চল বৈচিত্যে পরিপূর্ণ। সোনারগাঁও বাংলার ইতিহাসের এক গৌরবোজ্জ্বল প্রাচীন জনপদ। প্রায় তিনশত বছর সোনারগাঁও প্রাচীন বাংলার রাজধানী ছিল। সুলতানী আমলের পটভূমিতে আমাদের সোনালি ঐতিহ্যের দিকে পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখতে বেছে নেয়া হয়েছিল সোনারগাঁকে। মুঘল সুবেদার ইসলাম খানের সময়ে ১৬০৮ সালে ঢাকায় রাজধানী স্থানান্তরিত হওয়ার পর সোনারগাঁয়ের গুরুত্বপূর্ন স্থান হয়ে যায়। তথাপি সোনারগাঁও সাধারণ মানুষকে নিয়ে যায় সোনালি অতীতের কাছে। ঐতিহাসিক সোনারগাঁয়ে অতীত স্মৃতিকে সামনে রেখেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরামর্শ এবং আর্থিক সাহায্যে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের আন্তরিক প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয় গৌরবদীপ্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন যা সোনারগাঁও জাদুঘর নামেও পরিচিত।

যেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আসে পরিবার পরিজন নিয়ে আনন্দ ভ্রমনে। কিন্তু এসেই পরতে হয় নানা বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতিতে। সাধারণ দর্শনার্থীরা জানান, সোনারগাঁ যাদুঘরের গেইটে কয়েকজন আনসার সদস্য থাকলেও ভিতরে নেই কোন আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর লোক। সাধারণ মানুষকে হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে ইভটিজারদের হাতে। চার-পাচঁজনের কয়েকটি দল প্রায় সময় ভিতরে অবস্থান করে নানা রকম অশ্লীলন মন্তব্য করেন।

দেখা যায়, যাদুঘরের বাহিরে এবং ভিতরে বিভিন্ন নামে বেনামে খাবারের দোকানগুলোতে সিন্ডিকেট সিস্টেমে লাগামহীন দাম রাখছে। ২লিটার সেভেন আপ যেখানে কোম্পানী ১শ টাকা মূল্য নির্ধারণ করেছে সেখানে ১২০টাকা দাবি করছে দোকানদার। ৫লিটার ফ্রেশ পানি যেখানে ৭০টাকা কোম্পানী মূল নির্ধারণ করেছে সেখানে ৮০টাকা দাম রাখছে। দিতে নারাজ হলেও নানা পরিস্থিতির শিকার হতে হয় সাধারণ ক্রেতাদের।

অন্যদিকে, পানাম নগরীতে একটু নিরালা পরিবেশ হওয়াতে অশ্লীল কর্মকান্ডে লিপ্ত হচ্ছে উঠতি বয়সের তরুন-তরুনীরা। পরিবার পরিজন নিয়ে এমন এমন কর্মকান্ডের সম্মুক্ষিন হয়ে অনেকে ফিরে যাচ্ছেন বৈমুখ করে।

ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে ঘুড়তে আসা নাঈমুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, ছোট বাচ্চা নিয়ে এখানে এসেছিলাম, ভিতরের অবস্থা লজ্জাজনক। এমন কর্মকান্ডের জন্য গেইটে থাকা আনসার সদস্যদের বললাম তারা কিছুই বললো না। প্রশাসন এবং পরিচালনা কর্মকর্তাদের উচিত এ বিষয়ে নজর দেওয়া।

এতো বড় এড়িয়ে পর্যাপ্ত জনবল রয়েছে কিনা এ বিষয়ে নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন জানান, ‘ আমাদের ১৬জন আনসার সদস্য এবং ২৩জন ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মী রয়েছে। তবে আমার মনে হয় প্রয়োজনের তুলনায় নিরাপত্তায় জনবল কিছুটা কম। আমরা উপড়ে জানিয়ে প্রয়োজনিও ব্যবস্থা নিবো।
মাদক সেবি-ইভটিজার সহ দোকানদারদের মাধ্যমে মানুষ বিভিন্ন হেনস্তার শিকার হচ্ছে এ বিষয়ে আপনারা কতটুকু সোচ্চার এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের এখানে কেউ অভিযোগ করলে আমরা ব্যবস্থা নেই।

এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, আমাদের একটি ক্যাম্পে সেখানে আছে। যেখানে ৫জন পুলিশ সদস্য সব সময় টহল দিয়ে থাকে।
এছাড়া রূপগঞ্জের জিন্দা পার্ক মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি নারায়ণগঞ্জ শহরের শেখ রাসেল পার্ক সহ জেলা জুড়ে বেশ কিছু বিনোদন কেন্দ্র রয়েছে। সেখান পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেই। দিন যত যাচ্ছে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর সাধারণ মানুষ জেলার ঐ পর্যটন কেন্দ্র গুলোতে ভিড় করছে। প্রশাসন যদি এখন থেকে ঐ পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে নজর দাড়ি বৃদ্ধি না করে তাহলে যে কোন সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটনা ঘটতে পারে।